শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম :
চকরিয়া উপজেলার উত্তর হারবাং কোরবানীয়া ঘোনায় বিদেশী ব্রান্ডের নকল বেনসনসহ নানা ধরনের সিগারেট কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই এলাকায় চারদিকে পাকা সীমানা প্রাচীর দেওয়া একতলা ভবনকে ঘিরে বেশ কিছু থেকে রহস্যের সৃষ্টির পর অবশেষে নকল সিগারেট কারখানাটির সন্ধান পান প্রশাসন। এ কারখানায় বানানো নকল সিগারেট এবং নকল ব্র্যান্ড রোল লাগিয়ে বিক্রির ব্যবসায় জড়িত ছিল সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বরাবর দেওয়া প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এনবিআরের প্রতিবেদন বলছে—নকল সিগারেট তৈরি এবং ব্যান্ডরোল তৈরির সঙ্গে জড়িত ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আবদুস সবুর লিটন এর মালিকানাধীন বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো অন্যতম বৃহৎ। নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে, বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো নামের ওই কোম্পানিটির কারখানার জমির অংশীদারদের একজন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এ দুই প্রতিষ্ঠান মিথ্যা ঘোষণায় কাঁচামাল আমদানি করে এবং কক্সবাজারের চকোরিয়ায় ও কিশোরগঞ্জের কারখানায় নকল সিগারেট তৈরি করে। পরে নকল সিগারেট দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের তামাক ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের। এ ব্যবসার আয়ের একটি অংশ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসেবে জমা দেয়া হতো। নওফেল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমাদের প্রতিবেদন এনবিআর এ জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ এনবিআর’ই গ্রহণ করবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠান বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো নকল সিগারেট তৈরি এবং নকল ‘ব্যান্ড রোল’ লাগিয়ে বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরির হোতা।
বিজয় ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের। বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো প্রতিষ্ঠার পর থেকে কমপক্ষে ১০ হাজার টন সিগারেট তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করেছে সিগারেটের কাঁচামাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে।
যা দিয়ে ৫ কোটি সিগারেটের শলাকা তৈরি সম্ভব। এখানে সরকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ও অন্যান্য খাত বাবদ রাজস্ব হারিয়েছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এসব কারখানায় শীঘ্রই অভিযান জরুরী বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
ভয়েস/জেইউ।